ইন্টারনেট আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সময়ে আমরা ইন্টারনেটের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল আমরা ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমানে আমাদের জীবনকে চিন্তা করতে পারিনা এতটাই ওতপ্রোতভাবে ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে। আমরা বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করি দুইটি মাধ্যমে একটি সেলুলার ইন্টারনেট এবং একটি ওয়াইফাই ইন্টারনেট আমরা এই দুই মাধ্যমে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি জানার জন্য বলে রাখি বাংলাদেশের যে প্রান্তে আমরা বর্তমানে যে যেভাবেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি না কেন আমরা এই দুই মাধ্যমের মধ্যে যেকোনো এক মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করছি।
সেলুলার ইন্টারনেট কি…
১৯৭৯ সালে টোকিও জাপানে সর্বপ্রথম একটি কোম্পানি ফার্স্ট জেনারেশন নামে এই সেবাটি চালু করে এ নেটওয়ার্কটি সেই সময় শুধুমাত্র টোকিওতেই ব্যবহারযোগ্য ছিল এর পরবর্তী মাত্র পাঁচ বছরে জাপানের প্রত্যেকটি জনগণকে এই সেবা গ্রহণ করার সুযোগ করে দেয়। মূলত এই সেলুলার নেটওয়ার্ক টি হল একটি ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক সিস্টেম যেটা বর্তমানে আমরা অধিক পরিসরে ব্যবহার করছি এবং যেটাকে আমরা বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্ক বলে থাকি আমরা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি তাকে সেলুলার ইন্টারনেট বলে।
ওয়াইফাই ইন্টারনেট কাকে বলে….?
বর্তমানে আমাদেরকে আমাদের আইএসপি গন যে সকল সংযোগ দিয়ে থাকে এবং যে মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়তই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট একটি রাউটারের মাধ্যমে ব্যবহার ব্যবহার করছি সেটাকেই ওয়াইফাই ইন্টারনেট বলে। এই ওয়াইফাই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে আমাদের প্রয়োজন পড়ে একজন আইএসপির ইন্টারনেট সংযোগ, কেবল, প্যাচ কট, টিজে বক্স, অনু এবং রাউটার। যেহেতু রাউটার আমাদের এই ইন্টারনেট ব্যবহারের এক্সপেরিয়েন্সকে একটি উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছায় কেননা রাউটার যত ভালো হয় আমাদের ব্যবহার এক্সপেরিয়েন্স ও অধিক গতিশীল হয় এবং স্মুথলি হয়। তাই রাউটার কেনার পূর্বে আমরা সকলেই চেষ্টা করি বাজেটের মধ্যে একটি ভালো রাউটার কেনার জন্য আর এই কারণেই মূলত আজকে আমরা জানবো একটি ভালো রাউটার চেনার সঠিক উপায়। একটি ভাল রাউটার কিনতে গেলে আমাদের বেশ কিছু দিকে লক্ষ্য রাখতে হয় যদিও আমরা না জানার কারণে অনেকেই রাউটারের এন্টেনা অর্থাৎ অধিক এন্টেনা মানে ভালো রাউটার মনে করে থাকি এছাড়াও আমাদের মধ্যে কেউ এমন রয়েছে যে রেঞ্জ এর দিকে লক্ষ্য রাখি এবং মনে করি যে রাউটারটির রেঞ্জ যত বেশি সেটা তত ভাল রাউটার কিন্তু মূলত রাউটারের রেঞ্জ এবং এন্টেনা এগুলা ভালো রাউটার চেনার সঠিক উপায় নয় ভালো রাউটার কিনতে গেলে আমাদের বেশ কিছু দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমি পর্যায়ক্রমে সকল বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
ভালো রাউটার চেনার জন্য আমাদের করণীয়:
১. ভালো রাউটার চেনার জন্য আমাদের সর্বপ্রথম করণীয় বিষয় থাকবে রাউটারের ব্র্যান্ড বা গিগাহার্জ এর ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের বাংলাদেশ দুই ধরনের রাউটার বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে তার একটি হচ্ছে ডুয়েল ব্যান্ড এবং আরেকটি হচ্ছে সিঙ্গেল ব্যান্ড আমরা অনেকেই যেহেতু ডুয়েল ব্যান্ড এর রাউটার গুলো সিঙ্গেল ব্যান্ড এর রাউটারের থেকে কিছুটা কস্টলি হয়ে থাকে এজন্য এই কস্ট টাকে মাইনাস করার জন্য আমরা ডুয়েল ব্যান্ড এর পরিবর্তে সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার ক্রয় করার চেষ্টা করি তবে আমাদের জেনে রাখা উচিত যে ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার সিঙ্গেল ব্র্যান্ড রাউটারের থেকে অবশ্যই সর্বক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে থাকে কেননা ডুয়েল ব্যান্ড রাউটারের মধ্যে সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটারের সুবিধা প্রথম থেকেই থাকে অনেকে হয়তো ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার ব্যবহার করে দেখেছেন আপনারা লক্ষ্য করলে পাবেন ডুয়েল ব্যান্ড রাউটারে দুইটি fequency শো করে একটি ২.৪ গিগাহার্জ এবং অপরটি ফাইভ বিগাহার্জ হয়ে থাকে অপরদিকে সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটারে শুধুমাত্র ২.৪ গিগাহার্জ একটি ফ্রিকোয়েন্সি সরবরাহের সক্ষমতা রাখে। তাই সর্বপ্রথম আমরা চেষ্টা করব আমাদের বাজেটের মধ্যে ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার ক্রয় করার।
২. ভালো রাউটার ক্রয় করতে গেলে দ্বিতীয় যে বিষয়টি আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত সেটি হল আমি যে রাউটারটি ক্রয় করতে চাচ্ছি সেটি কোন জেনারেশন বোঝার জন্য বলি আমরা খুব সহজেই একটি ফোন ক্রয় করতে গেলে অবশ্যই আমি ২০২৪ এ একটি ফোন যদি ক্রয় করতে যায় তাহলে অবশ্যই চেষ্টা করি ২০২৪ অথবা ২৩ অথবা ২১-২২ এর মধ্যে ক্রয় করার কিন্তু আমি কখনোই চাই না যে আমি ২০২৪ এ একটি ফোন কিনছি মার্কেট থেকে কিন্তু সে ফোনটি ২০১০ অথবা এর থেকেও আগের হয়ে থাকুক আরো সহজে বুঝতে পারব যখন আমরা একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার কিনতে চাই তখন আমরা কিন্তু জেনারেশনের দিকে লক্ষ্য রাখি যে এটি জেনারেশন ফোর বা ফাইভ বা 6 বা 7 অবশ্যই আমরা আপডেট জেনারেশন ক্রয় করার চেষ্টা করি ঠিক তেমনি ভাবে একটি রাউটার কয়ের ক্ষেত্রেও জেনারেশন টা লক্ষ্যণীয় বিষয় আমরা মার্কেট থেকে যদি কোন সিঙ্গেল ব্র্যান্ডের রাউটার ক্রয় করে থাকি তাহলে নিঃসন্দেহে সেটা জেনারেশন ফোর হবে কিন্তু এর থেকে আপডেট কিনতে গেলে জেনারেশন ফাইভ যেটাকে বলে ওয়াইফাই 5 ওয়াইফাই 6 ওয়াইফাই 12 বর্তমানে ওয়াইফাই এ এক্স পর্যন্ত জেনারেশন এর রাউটার মার্কেটে পাওয়া যায় অবশ্যই আমি যদি একটি ভালো মানের উন্নত রাউটার ক্রয় করতে চাই এবং আমার বাজেট এর কোন সমস্যা না হয়ে থাকে তাহলে আমি আপডেট জেনারেশন ক্রয় করার চেষ্টা করব তাহলে নিঃসন্দেহে আমি একটি ভালো রাউটার পেতে পারি।
৩. এরপর এটি ভালো রাউটার ক্রয় করতে গেলে আমাদের আরো যে বিষয়টি জানার প্রয়োজন সেটি হল চিপসেট আমাদের ফোন বা ল্যাপটপে যেরকম ভাবে প্রসেসর এর দিকে আমরা লক্ষ্য রাখি ঠিক তেমনিভাবে রাউটারেরও প্রসেসর বা চিপসেট আমরা যদি লক্ষ্য রাখতে পারি তাহলে আমরা একটি ভালো রাউটার খুব সহজেই হাতে পেতে পারবো।
৪. এরপর ভাল রাউটার ক্রয় করার ক্ষেত্রে আমরা রেঞ্জ এর দিকে লক্ষ্য রাখতে পারি যে আমি যে রাউটারটি ক্রয় করতেছি এ সকল কিছু সাথে রেঞ্জ এর বিষয়টিও ঠিক আছে কিনা আমার প্রয়োজন অনুসারে রেঞ্জ দিতে পারে কিনা যদি সে সক্ষমতা আমার পছন্দ কিন্তু রাউটার দিতে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে আমি আমার প্রয়োজন অনুসারে একটি ভালো রাউটার চেঞ্জ করছি।
৫. এরপর ভাল রাউটার ক্রয় করার ক্ষেত্রে এন্টেনার বিষয়টি আসে এন্টেনা আমরা অনেকেই মনে করি যত বেশি এন্টেনা হবে তত বেশি ভালো রাউটার কিন্তু অবশ্যই এন্টিনা গুলো ভালো রাউটারের সনদ ব্যবহার করে না এন্টেনা এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমার এই এন্টেনা গুলো কত ডিবিআই অর্থাৎ ফাইভ ডিবিআই বা সিক্স ডিবিআই অথবা নাইন ডিবিআই, ডিভিআই এর সংখ্যা যতটা বেশি হবে অবশ্যই রাউটারের পারফরম্যান্সের ওপরে এটা অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করবে তাই আমরা এ বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে পারি।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: অবশ্যই এ সকল বিষয় লক্ষ্য রাখতে গেলে বাজেট কিছুটা বেশি রাখতে হবে তাই আমাদের যাদের বাজেট নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই তারাই শুধুমাত্র এর সকল বিষয়ের লক্ষ্য রেখে ভালো রাউটার ক্রয় করতে পারি কিন্তু যদি আমাদের কারোর বাজেট ১৫০০ থেকে ২০০০ হয়ে থাকে তাহলে আমাদের বাজেটের মধ্যে ভালো রাউটার আমরা ক্রয় করব সে ক্ষেত্রে উপরের বর্ণিত সকল বিষয় কাজে লাগানো সম্ভব হবে না।)
কম বাজেটে ভালো রাউটার:
আমরা সকলেই ভাল রাউটার ক্রয় করতে চাই এবং একটি ভালো এক্সপেরিয়েন্স এর সাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাই কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমাদের বাজেটের দিকে লক্ষ্য রেখে রাউটার ক্রয় করতে হয় যদি আমাদের বাজেট কম হয় অথবা ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা এর মধ্যে অথবা তিন হাজার টাকা এর মধ্যে হয় তাহলে যে সকল বিষয়গুলো ক্রয় করতে পারি সেগুলো হলো। প্রথমতঃ রেঞ্জ হঠাৎ যে রাউটারটি আমি ক্রয় করতে চাচ্ছি সেটি কতটুকু রেঞ্জ দেওয়ার সক্ষমতা রাখে সেটা দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ লং লাস্টিং আমি যে রাউটারটি আমার বাজেটের মধ্যে ক্রয় করার চেষ্টা করছি সেটি সর্বোচ্চ কতদিন পর্যন্ত একটি ভালো সার্ভিস দিতে সক্ষম সেটির বিষয়ে জ্ঞান রাখা। আরো কিছু বিষয় রয়েছে। সকল বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে ১৫০০ ও ২০০০ টাকা এর মধ্যে অথবা ৩ হাজার টাকা এর মধ্যে যে সকল রাউটার গুলো এখন ভালো সার্ভিস দিচ্ছে সেগুলোর একটি ধারণা বা লিস্ট আপনাদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করব জানার জন্য বলে রাখি আমি একজন আইএসপি স্পেশালিস্ট এবং আইএসপি বিজনেস এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে এ বিষয়ে কিছুটা ধারণা রাখি যার দরুন আপনাদের জ্ঞাতার্থে এ বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। কখনোই কোনো সপ বা কোম্পানির স্বার্থে আমি আমার ভিওয়ারদের কোন জিনিস ভালো না হওয়া সত্ত্বেও ব্যবহার করার পরামর্শ দেই না।
স্বল্প বাজেটে সিঙ্গেল ব্যান্ডের মধ্যে যে রাউটার গুলো এখন ভালো সার্ভিস দিচ্ছে সেগুলো হলো।
1. Netis 3 antenna
2.Tauranga WWR N002n2
3.Tenda f3
4.Tanda f6
5.TP-Link TL-wr841n
6.TP-Link TL-wr820n