ইন্টারনেট! ইন্টারনেট কে আবিষ্কার করেন বা ইন্টারনেটের শুরুর গল্প কী..? এই ধরনের প্রশ্ন আমাদের হাজারো ইন্টারনেট ইউজারদের মনে এসে থাকে এটা সত্য যে আগুন আবিষ্কারের পর সব থেকে বড় আবিষ্কার হল ইন্টারনেট আবিষ্কার। একটা সময় এই বিষয়টা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে সেরকম কোন একটা প্রভাব না ফেললেও এখন এটা বলা যেতে পারে যে ইন্টারনেট ছাড়া বর্তমান সময়ে সবকিছুই প্রায় ভেঙে পড়ার মতন। কারণ ব্যক্তিগত জীবন থেকে নিয়ে কর্পোরেট জীবন বা বিজনেস জীবন ইত্যাদি সবকিছুর সাথেই এখন ইন্টারনেট সম্পৃক্ত। তবে প্রত্যেকটা জিনিসেরই কিছু সুবিধা অসুবিধা কিছু ভালো কিছু খারাপ থাকে সেই দিক থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমেও যেমন ইন্টারনেটের কারণে অর্থ ছুটি বা হ্যাকিং এর শিকার হওয়ার গল্প যেমন আছে তেমনি ভাবে এই ইন্টারনেটের কারণেই অনেকের লাইফ চেঞ্জ হওয়া এবং অনেকে এই ইন্টারনেটের উপর ভরসা করে তার ব্যক্তিগত জীবন ও পারিবারিক জীবন পরিচালনা করছেন এরকম হাজারো মানুষ আমরা এখন পাব।
তবে এটা সত্য যে ইন্টারনেটের খারাপ দিকগুলোর থেকে ভালো দিকগুলো অনেক বেশি এরপর কিছু কিছু দিক এমন আছে যেটা ইন্টারনেট ইউজারের উপর নির্ভর করে সে যেমনটি চাই তার সাথে তেমনটি হয়। যেমন সে যদি ভালো কিছু সার্চ করে ভালো কিছু দেখতে চাই জানতে চাই তাহলে সে সেটাই পাই এবং এর বিপরীত যদি কেউ কিছু চায় তাহলে সে সেটা পায় বর্তমান সময়ে এটা বলা যেতে পারে যে আমি ইন্টারনেটকে যেমনভাবে দেখি ইন্টারনেট আমার জন্য তেমন। এখন প্রশ্ন হল ইন্টারনেট আসলো কিভাবে বা কে ইন্টারনেট আবিষ্কার করেছেন। এতোটুকু তো আমরা বুঝি যে ইন্টারনেটের মত এত বিশাল একটি জিনিস যদি কেউ একে আবিষ্কার করে থাকতো তাহলে অবশ্যই তার নাম বইয়ের পাতায় পাতায় এবং প্রত্যেকটি এক্সাম বা বিশেষ এক্সামে প্রশ্ন আসতো এটাই স্বাভাবিক যদি এর উত্তর বলতে চাই তাহলে বলা যেতে পারে ইন্টারনেট কোন একজন ব্যক্তির দ্বারা আবিষ্কৃত নয়। তবে ইন্টারনেট আবিষ্কারের ঘটনাটা অনেক মজার। ১৯০০ সালে নিকোল টেসলা তার একটা ধারণার কথা বলেন তিনি বলেন পুরো পৃথিবীকে যদি তার ছাড়াই কানেক্ট করা যেত একজন আরেকজনের সাথে তাহলে বিষয়টা কেমন হতো!
এরপরে ২০ থেকে ৩০ বছর এ নিয়ে অনেক রিসার্চ হয়। এরপর ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এ বিষয় নিয়ে দেখানোর মতো কোনো রেজাল্ট আসে নাই। ১৯৬০ সালে এসে একটি মজার ঘটনা ঘটে এম আই টির একজন প্রফেসর লিংকটার পুরো পৃথিবীকে একটা ধারণা দেয় যে এ ধারণাটা কে বলা হয় intergalactic computer network এবং এরই মধ্যে কম্পিউটার সবাই চিনে গেছে আর এই ধারণাটার মূল বিষয় হলো সকল কম্পিউটারকে কিভাবে সংযুক্ত করা যায়। এর ঠিক পরেই প্যাকেট সুইচিং নামে একটি টেকনোলজি আবিষ্কার হয়। যার মাধ্যমে ডাটা আদান প্রদান করার একটি বড় ব্যাপার আবিষ্কৃত হয় যেটা আগে ছিল না। এ সকল বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে আমেরিকান আর্মি এর টাকা দিয়ে ১৯৬০ এ একটি অনেক বড় রিসার্চ হয় এবং বানানো হয় Advance Research Projects Agency Network বা সংক্ষেপে অর্পানেট এই অর্পানেট-ই প্রথম একটি নেটওয়ার্কের মধ্যে অনেকগুলো কম্পিউটারকে কানেক্ট করে ডাটা আদান-প্রদান করে দেখায় এবং এই বিষয়টাকেই প্রথম ইন্টারনেট বলা হয়।
এবং এ ডেটা পাঠানোর কাজটি সর্বপ্রথম করা হয় ১৯৭৯ সালের ২৯ অক্টোবর এবং ডেটা পাঠানো হয় স্টান্ডফোর্ড ইউনিভার্সিটি ল্যাব থেকে ইউসিএল এর একটি ল্যাবে এবং সে সময় দুইটা কম্পিউটারের সাইজ ছিল একটি একতলা ভবনের সমান। এরপরও ফাস্ট রিসার্চ এর সময় যে ডাটাটি প্রেরণ করা হয়েছিল সেটা পূর্ণ না যাওয়ার আগেই কম্পিউটার ক্রাশ করে কিন্তু ক্রাশ করার পূর্বে কিছু ডেটা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ট্রান্সফার হয়ে যায়। যাতে করে প্রমাণিত হয় যে এই দুইটা কম্পিউটার আসলেই সংযুক্ত হয়েছে এবং একটি কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা পাঠানো সম্ভব। আর ওই দিনেই আমরা বুঝতে পারি যে ইন্টারনেট নামে একটা কিছু আবিষ্কার হয়েছে। আর এই একটি আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে পরে ই অন্য আবিষ্কারের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আর এই একটা আবিষ্কারের পরে আরেকটি আবিষ্কারের সুযোগ তৈরি হয়। বর্তমান সময়ের ওপর ভিত্তি করে এটি বলা যেতেই পারে যে ইন্টারনেট আবিষ্কার না হলে হয়তো মানবজাতির এই সভ্য জগতকে এগিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়ে যেত। এটা বলাই যেতে পারে যে ইন্টারনেট হল মানব জাতির যত সেরা আবিষ্কার আছে তার মধ্যে একটি। আপনার কাছে কি মনে হয় ইন্টারনেট কি মানুষের সেরা আবিষ্কার গুলোর মধ্যে একটি….?